লেখকঃ তানভীর রানা রাব্বি
ভালোবাসা সহ যত প্রকার অনুভুতি আছে, সবই মস্তিষ্কে সংঘটিত হওয়া রাসায়নিক বিক্রিয়া। কিন্তু ভালোবাসার সাথে হৃৎপিন্ড/heart জড়িয়ে আছে সেই প্রাচীন কাল (not really) থেকে। একটা সময় মনে করা হতো শরীরের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে হৃদপিন্ড। কিন্তু সবকিছু সেই ভুল ধারণ থাকে সরে আসলেও “ভালোবাসা” আজও সরে আসে নি। এখন ভালোবাসা পেছনে মস্তিষ্ক ঘটিত রসায়ন বিশ্লেষণ করা যাক।
প্রথম ধাপ:
প্রেম পরার প্রথম দিকে cortisol নামক হরমোনের প্রভাব খুব বেশি থাকে। এই হরমোন নতুন বা অপরিচিত কিছু গ্রহণ করার প্রাথমিক যে ভীতি তা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। এইসময় serotonin (5-hydroxytryptamine) নামক এক monoamine neurotransmitter-এর পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। আবার মস্তিষ্কের prefrontal cortex অংশ এ সময় কর্মক্ষমতা হ্রস করে দেয় যাতে আপনি আপনার সঙ্গীকে বেশি যাচাই-বাঁছাই করতে না হয়। এজন্য দেখবেন বেশিরভাগ মেয়েদের প্রথম প্রেম থাকে পুরা আজাইরা ছেলের সঙ্গে তবে সবাই না (i repeat সবাই না)।
২য় ধাপ:
এই সময় ভালোবাসায় কিছুটা স্থিরতা আসে। এই সময় নিরাপত্তা, দৃঢ়তা আর ভারসাম্য আসে সম্পর্কে। আবেগ থাকে, সাথে ঘনিষ্টতা, অঙ্গীকার বাড়ে। cortisol, serotonin -এর পরিমাণ স্বাভাবিক হয়ে আসে, অন্যদিকে oxytocin আর vasopressin এর পরিমাণ বাড়তে থাকে। তো পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে এসব হরমোন মস্তিষ্কের বিভিন্ন গ্রহন প্রোটিনের সাথে বন্ধন তৈরি করে, আর সেটা মস্তিষ্কে ভালোলাগার অনুভুতি তৈরি করে। যখন এই হরমোন আর receptor এর মধ্যে মিলন ঘটে, তখন dopamine নামের neurotransmitter-এর নিঃসরণ হয়। যার ফলে আসাধারণ অনুভুতির সৃষ্টি হয়।
Oxytocin আর vasopressin কিন্তু একই কাজ করে না। মেয়দের oxytocin তুলনামূলক বেশি থাকে, সেজন্য তারা প্রেমিকের সাথে গভীর বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যায়। “বাবু খাইসো” টাইপের। আবার পুরুষদের vasopressin থাকে যেটা তাদেরকে সাহস যোগায়। এটা ভীতিকর, চাপদায়ক পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাহায্য করে। এজন্যই মায়েরা সন্তান আদর করে যত্ন নেয়, আর বাবারা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন।
এটাই মুলত ভালোবাসার চক্র, তবে একটা অংশ যুক্ত করি। যদিও সেটা সম্পর্ক ভাঙ্গার ব্যাপার।
৩য় ধাপ:
অনেক সময় দেখা যায় দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ার বুকে ব্যথা হয়। আর এটা ভুল নয়, আসলেই সত্য। শারীরিক ব্যথার এবং মানসিক ব্যথার সময় মস্তিষ্কে একই উদ্দীপনা কাজ করে। তাছাড়া এসময় অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে। এসময় adrenaline/epinephrine হরমোন নিঃসরণ বেড়ে যায়। যার কারণে ব্যাপক মানসিক পরিবর্তন ঘটতে পারে। clinical depression সহ নানা ধরণের মানসিক প্রভাব পরতে পারে। So সাবধান, কারণ এসব ব্যাপার অনেক বেশি tough & hurting. Who knows better than me :)
তানভীর রানা রাব্বি,
ব্যাঙের ছাতার বিজ্ঞান।