লেখকঃ রওনক শাহরিয়ার
ওয়াইফাই রাউটার কেনা বা পরিবর্তন করার সময় অনেকে কনফিউজড হয়ে যায়। ওয়াইফাই ফিচার, সিঙ্গেল বা ডুয়েল ব্যান্ড বা ট্রিপল ব্যান্ড সহ কিছুবিষয় সামনে চলে আসে। রাউটার এর ক্ষেত্রে সিঙ্গেল 2.4 GHz ও ডুয়েল ব্যান্ড হলো 2.4 GHz 5 GHz এর ওয়াইফাই। এক্ষেত্রে ট্রিপল ব্যান্ড রাউটার দুইটি 5 GHz এবং একটি 2.4 GHz ব্যান্ড ব্যবহার করে। এখন নম্বরগুলো দিয়ে আসলে কী বোঝায় এবং এর কাজ কী তা জেনে নেওয়া যাক।
ব্যান্ড কী?
ওয়্যারলেস রাইটার রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সী ব্যবহার করে ডিভাইস সংযুক্ত করে। 2.4 GHz এবং 5 GHz হলো ওয়াইফাই এর দুইটা আলাদা ফ্রিকোয়েন্সী ব্যান্ড।
এদের মধ্যে মূল পার্থক্য হলো- ব্যান্ডইউথ (ইন্টারনেট গতি) এবং সিগনালের সীমা। যদিও রাউটারের স্পিড ISP এর নির্ধারিত স্পিড প্রদান করে।
যদি ওয়াইফাই রাউটারে সেটিংসে যাওয়া হয়, তবে 'Channel' নামের শব্দটি চোখে পড়া স্বাভাবিক। বেশির ভাগ রাউটারে চ্যানেল অটো সেট করা থাকে। ওয়াইফাই এর স্ট্যান্ডার্ডের মধ্যে সবগুলো 2.4 GHz সাপোর্ট করলেও, সর্বশেষ কয়েকটা শুধু 5 GHz সাপোর্ট করে। 2.4 GHz ব্যান্ড ১১টা আলাদা আলাদা চ্যানেলে ভাগ করা থাকে, যার প্রতিটা 20 MHz। সেখনে 5GHz ব্যান্ড এ ৩৬ থেকে ১৬৫ পর্যন্ত চ্যানেল থাকে এবং 6 Ghz এ ব্যান্ড ১ থেকে ২৩৩ পর্যন্ত চ্যানেল থাকে। উভয় ফ্রিকোয়েন্সীই ২০-১৬০ MHz এর কাজ করে।
2.4 GHz চ্যানেল:
এই ২০২১ সালেও এসেও 2.4 GHz প্রযুক্তি ব্যবহার সর্বক্ষেত্রে লক্ষণীয়। ২০১৩ সালে 802.11ac ব্যান্ড চালুর মাধ্যমে 5 GHz এর শুরু হয় এবং ২০২০ এ 802.11ax বা WIFI এর ৬ষ্ঠ জেনারেশন শুরু হয়। যদিও এখনও 2.4 GHz সুবিধাযুক্ত রাউটারের দাম, সীমা সহ বিষয়গুলোর জন্য এখনও প্রচলিত।
ওয়াইফাই এর সব স্ট্যান্ডার্ড 2400-2500 MHz ফ্রিকোয়েন্সীতে কাজ করে। এই 100MHz ১৪টা আলাদা আলাদা চ্যানেলে বিভক্ত থাকে,যার প্রতিটা 20 MHz এর হয়ে থাকে এবং মাত্র ৩ চ্যানেল ওভারল্যাপ করে না। অন্য ১১টি চ্যানেল অন্তত দুইবার ওভারল্যাপ করে (ছবিতে দেখুন)।
এখানে ১,৬ এবং ১১ নং চ্যানেলের দূরত্ব বেশি হওয়াই একে ওপরের সংস্পর্শে আসে না। বা ডেটা ট্রান্সফারের সময় একটি চ্যানেল ক্লিয়ার (২-৫, ৭-১০ এ) না হলে অন্যটা ডেটা ট্রান্সমিট করতে পারে না। যা বেশি ডিভাইস কানেকশনে ডেটা ট্রান্সফার রেট কমিয়ে দেয়।
আর 802.11n স্ট্যান্ডার্ড এ 40 MHz চ্যানেল ব্যবহার করা যায়।
5 GHz চ্যানেল:
এবার 5 Ghz নিয়ে আলোচনা করা যাক। প্রথমেই আসা যাক এর পার্থক্য নিয়ে। 2.4 GHz এ মাত্র ১১টি চ্যানেল সাপোর্ট করে, যেখানে 5GHz ২০টি নন ওভারল্যাপিং চ্যানেল সাপোর্ট করে। 802.1n স্ট্যান্ডার্ড 2.4 GHz এ 40 MHz চ্যানেল থাকে। সেখানে 402.11 ac তে 80MHz এমনকি 160 MHz বিস্তৃত চ্যানেল ব্যবহার করা সম্ভব। এখানে 20 MHz এর দুটো চ্যানেল সংযুক্ত হয়ে 40 MHz তৈরী হয়, যেমনটা চিত্রের 36 ও 40 নং চ্যানেল মিলে 38 নং চ্যানেল তৈরী করেছে।
এভাবে দ্রুত ডেটা ট্রান্সফার করা যায় এবং অতিরিক্ত ডিভাইস সংযুক্ত করা সম্ভব। এছাড়াও wifi 6 আরও বেশি সুবিধা দিয়ে থাকে।
তবে ডিভাইস কানেকশনের জন্য কোন ব্যান্ড কার্যকরী?
এটা ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে। কারণ প্রতিটা ব্যান্ডেরই নিজস্ব কিছু সমস্যা আছে।
2.4 GHz এ ডেটা স্পিড কম, কিন্তু ফ্রিকোয়েন্সী কম হওয়াই বেশি দুরত্বের কভারেজ দিতে সক্ষম, দেয়ালের বাধা খুব একটা সমস্যার কারণ হয় না। আর 5 GHz এ ডেটা ট্রান্সফার রেট বেশি হলেও, কভারেজ কম দূরত্বের দেয়, কোনো বাধা আসলে নেটওয়ার্কে সমস্যা হয়।
প্রতিটা চ্যানেল সেম ডেটা প্ররণ করে। 2.4 GHz এ চ্যানেল সংখ্যা কম হওয়ায় ইউজার ও ডেটা ট্রান্সফার রেট অনেক কম। সেখানে 5 GHz বিপরীত।
2.4 GHz মাইক্রোওয়েভ, ব্লুটুথ সহ অনেক ডিভাইসে ব্যবহার করা হয়। আবার রাউটারও সবার কাছে কমন। যদি ঘনবসতি এবং চারপাশে রাউটার বেশি দেখায় তবে 5 GHz ভালো অপশন। কারণ চ্যানেল সংখ্যা কম হওয়ায় ডেটা ট্রান্সফারে সমস্যা এমনকি ওয়াইফাই ডিসকানেকটেড হতে পারে। 5 GHz এখনও মানুষের মাঝে পরিচিত না পাওয়াই এবং চ্যানেল সংখ্যা বেশি হওয়ায় ডেটা ট্রান্সফারের সমস্যা হওয়ার সম্ভবনা একেবারেই কম।
তবে দূরত্ব ও ঘনবসতি না থাকলে 2.4 GHz ভালো অপশন।
আর 5 GHz রাউটার এখনও প্রচলিত না হওয়াই দাম বেশি। সে তুলনায় 2.5GHz রাউটার অনেক সস্তা।
সোর্স:
১.https://www.centurylink.com/home/help/internet/wireless/which-frequency-should-you-use.html
২.https://www.tanaza.com/blog/5ghz-vs-2-4ghz/
৩.৪
৫.
৬.
রওনক শাহরিয়ার,