লেখকঃ শোভন বিশ্বাস
বজ্রপাত আমাদের কাছে খুবই পরিচিত একটা ঘটনা। এর পেছনের পদার্থবিজ্ঞান অনেকে সহজ মনে করলেও, আসলে ভিতরের গল্পটা একটু ভিন্ন। চলুন, জেনে নেয়া যাক যতটুকু সম্ভব:
মেঘের মধ্যে চার্জের বিন্যাস এখন পর্যন্ত পুরোপুরি জানা যায়নি। রিসার্চ পেপার থেকে পাওয়া এপর্যন্ত সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মতবাদ হচ্ছে The Convective Charging Mechanism. এই প্রক্রিয়ায় মেঘ প্রথমে পৃথিবী থেকে চার্জ (+ve) গ্রহণ করে। Induction (আবেশ)-এর জন্য মেঘের বাইরের সারফেসে (-ve) চার্জ সৃষ্টি হয় যা মেঘের ধার ঘেঁষে নিচে জমা হয়। Visualize করতে চাইলে Upward Fountain এর কথা ভাবতে পারেন (fig-1)। Fountain-এ যেমন পাইপ দিয়ে অনবরত পানি উঠে, মেঘ ও তেমনি পৃথিবী থেকে (+ve) চার্জ টেনে নেয়। তবে আউটপুট টা ইনডাকশনের জন্য (-ve) হয়।
ধরা যাক, ভূপৃষ্ঠ থেকে ঠিক ১ কি.মি উপরে ৫ কি.মি ব্যাস ও ১০ কি.মি উচ্চতার অনেক বড় এক খন্ড Thundercloud (অনেকগুলো চ্যাপ্টা আকারের ঘন মেঘের সমষ্টি যা জলীয় বাষ্পের তৈরি) আছে। যখন এই বিরাট মেঘ পুরোপুরি চার্জড হয়, তখন এর নিচের দিকে (-ve) আর উপরের দিকে (+ve) চার্জ থাকে। আবার Induction-এর জন্য পৃথিবী পৃষ্ঠ (+ve) চার্জড হয়। মেঘ আর পৃথিবী পৃষ্ঠকে দুটি Charged Plane কল্পনা করা যায় (parallel conductors)। উৎপন্ন electric field-এর দিক (+ve) to (-ve) charge বা upwards এবং এটি constant (parallel electric field lines). এখানে চার্জ বেশি হবার জন্য Electric field-ও বেশি হয় যা electric breakdown (discharge of electron in the air)-এর কারণ হতে পারে। Discharge কারণ হচ্ছে Oxygen/Nitrogen molecules-এর সাথে cloud electron-এর সংঘর্ষ। HSC-তে পড়েছেন এটা হয়তো। যদি এই অণুগুলিকে আয়নিত করার জন্য ইলেকট্রনের যথেষ্ট গতিশক্তি থাকে, তবে সংঘর্ষের ফলে সেখানে দুটি ইলেক্ট্রন তৈরি হয়, একটি মেঘ থেকে এবং অন্যটি অক্সিজেন বা নাইট্রোজেন অণু থেকে এবং ইলেকট্রন বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের বিপরীতে acceleration শুরু করে (cloud to earth, downwards)। চার্জের নিরপেক্ষতা অর্জন (neutralisation) অবধি এই প্রক্রিয়াটি বারবার চলতে পারে। Neutralisation প্রক্রিয়া আলো উৎপন্ন করে যা আমরা spark নামে জানি এবং দেখি। যেখানে মেঘের পৃষ্ঠের বক্রতা ছোট (উচ্চ বৈদ্যুতিক ফিল্ড লাইন) সেখানে স্পার্ক উৎপন্ন হয়।
কিন্তু, বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রটি কতটা শক্তিশালী হওয়া উচিত?
পরীক্ষামূলকভাবে, যদি আপনি ঘরের তাপমাত্রায় শুকনো বায়ু (1 atm চাপে) বিবেচনা করেন, তবে Oxygen/Nitrogen অণুটির সাথে সংঘর্ষের মধ্যে গড়ে একটি ইলেকট্রনকে প্রায় 1 মাইক্রন (1 micron=10^(-6) meter) পথ ভ্রমণ করতে হয়। বাস্তবে, ব্রেকডাউনের কাছাকাছি প্রয়োজনীয় electric field 3 million volts/meter(😱) এর মতো। Neutralisation process বায়ু উত্তপ্ত করে, চাপ তরঙ্গ (pressure wave) উৎপন্ন করে এবং আমরা শব্দও শুনতে পাই।
Now, for cloud,
∆V=Ed = 3 MV × 1 km = 3 billion volts (🤯)
মেঘটি প্রায় 2 থেকে 10 মিটার ব্যাসের একটি ফানেল গঠন করে এবং একে step leader বলা হয়। এটি প্রতি সেকেন্ডে প্রায় 100 মাইল বেগে চলে। সুতরাং, পৃথিবীতে পৌঁছতে এটির 5-6 মিলিসেকেন্ড লাগবে এবং এখানে মাত্র অর্ধেক কুলম্ব চার্জ খরচ হয়।
So, I=Q/t ≈ 100 A (10-20 amperes of electric shock can kill you instantly ! ⚠️)
Step leader-টি ionised air-এর একটি layer গঠন করে যেটা খুব ভালো তড়িৎ পরিবাহী। যখন step leader মাটিতে পৌঁছায়, তখন সেখানে এই অত্যন্ত পরিবাহী চ্যানেল তৈরি হয় এবং ইলেক্ট্রন খুব দ্রুত এই চ্যানেল থেকে মাটিতে প্রবাহিত হতে পারে। যদি পৃথিবীতে পৌঁছানোর আগেই চার্জ neutralized হয়ে যায়, তাহলে আমরা শুধুমাত্র মেঘের ভিতরে বজ্রপাত দেখতে পাই (fig-2) এবং শব্দও শুনি। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি দুটি মেঘের মধ্যেই বেশি ঘটে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পৃথিবী পৃষ্ঠে আসে না। এটিই সাধারণ বজ্রপাত।
Resources:
1. MIT OCW
2. https://www.researchgate.net/publication/227134643_Charge_Separation_Mechanisms_in_Clouds
শোভন বিশ্বাস,
ব্যাঙের ছাতার বিজ্ঞান।