লেখক: তাজউদ্দিন আহম্মদ
গ্রীষ্মের দুপুরে মাথার উপর স্বচ্ছ নীল আকাশে ভেসে বেড়ায় বিশাল বিশাল মেঘের ভেলা। বর্ষার আকাশে থাকে নিকষ কালো মেঘ,শরতে পরিষ্কার আকাশে পেঁজা তুলোর মত ভেসে বেড়ায় মেঘেরা। নানান সময়ে নানান ধরনের মেঘেদের আনাগোবা থাকে নীল আকাশজুড়ে।নানা অদ্ভূত আকৃতির মেঘ দেখা যায় পুরো বছরজুড়ে।
কখনও কি এসব মেঘের নাম জানতে চেয়েছি?
মেঘের আবার নামও হয়?
এই সব মেঘেদের কিন্তু নাম রয়েছে। আকার,আকৃতি,রং এর উপর ভিত্তি করেও মেঘের অনেক শ্রেণীবিভাগ রয়েছে।
মেঘ কি?
মেঘের শ্রেণিবিভাগ জানার আগে প্রথমে মেঘ কি,কিভাবে তার উৎপত্তি তা জানা প্রয়োজন।
কোনো গ্রহ বা উপগ্রহের আবহমন্ডলে ভাসমান জলক্ণার সমষ্টিকে মেঘ বলা হয়।মার্ধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে আকৃষ্ট ধূলিকণা ও গ্যাসীয় পদার্থের স্তুপকেও মেঘ বলা যেতে পারে,যেমন আন্তঃনাক্ষত্রিক মেঘ।
সাধারণ ভাষায় আমরা মেঘ বলতে যা বুঝি সেগুলো হলো পৃথিবীতে মাথার উপর ভাসমান সাদা সাদা বিশাল স্তুপ।
বায়ুর জতীয়বাষ্প যখন ক্রমশ উপরে উঠে,একটি নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে শীতলতার স্পর্শে তা ঘনীভূত হয়।ঘনীভবনের ফলে তা ক্ষূদ্র ক্ষুদ্র জলকণা ও তুষারকণায় পরিণত হয়।এর সাথে মিশে থাকে বায়ুতে ভাসমান ধূলিকণা ও নানা গ্যাসীয় বস্তুপুঞ্জ।এগুল্য মিলে সৃষ্টি করে বিশাল ভাসমান মেঘ,যা ভেসে বেড়ায়।
মেঘ নিয়ে গবেষণার জন্য Nephology বা মেঘবিজ্ঞান নামে একটি বিশেষ শাখাও রয়েছে।যেখানে শুধুমাত্র মেঘ,মেঘের ধরণ,উৎপত্তি ইত্যাদি নিয়েই গবেষণা করা হয়।
মেঘের শ্রেণিবিভাগ-
নানান রং ও আকৃতি নিয়ে ভেসে বেড়ানো মেঘমালার অনেক শ্রেণি রয়েছে।
মেঘের শ্রেণিবিন্যাস করার ক্ষেত্রে মূলত চারটি Property ( বৈশিষ্ট্য) বিবেচনা করা হয়।
1. Hight (উচ্চতা)-
উচ্চতার ভিত্তিতে প্রধানত তিনটি শ্রেণি
হিসাব করা হয়। Low level (নিম্ন
উচ্চতা),Mid level (মধ্যম উচ্চতা) ও
High level (বেশি উচ্চতা) অনুযায়ী
মেঘমালাকে বিন্যস্ত করা হয়।
2. Colour (রং)-
বিভিন্ন মেঘ সাধারণত যেমন রং ধারণ
করে।
3. Shape (আকৃতি)-
যে ধরণের আকৃতি সাধারণত
মেঘেরা ধারণ করে।
4. Weather (আবহাওয়া)-
মেঘেরা যেমন আবহাওয়া নির্দেশ
করে।
আমরা এখানে প্রধানত উচ্চতার ভিত্তিতে মেঘের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা করব।মেঘেদের বিন্যস্ত করার ক্ষেত্রে এটিই সবচেয়ে সহজ ও গৃহীত পদ্ধতি।
High level Clouds-
(অধিক উচ্চতায় অবস্থিত মেঘমালা)
Range-(5-13 km)-
Cirrus Clouds
Cirrus হলো খুবই সাধারণ প্রকৃতির মেঘ যা প্রায় পুরো বছরব্যাপীই দেখতে পাওয়া যায়।মেঘগুলোর স্তর পাতলা,ছিপছিপে, স্বচ্ছ এবং প্রখর উজ্জ্বল হয়।এ মেঘগুলো সাধারণত বরফের ক্রিস্টাল দ্বারা তৈরি হয় এর তাপমাত্রাই নির্ধারণ করে মেঘগুলো কতটুকু স্বচ্ছ হবে।সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সময় এরা উজ্জ্বল হলুদ অথবা লাল রং ধারণ করে।দিনের আলোয় এদের সাদা পালকের মত দেখায়।Cirrus মেঘেরা পরিষ্কার আকাশ নির্দেশ করে এবং এই মেঘগুলো থাকাবস্থায় বৃষ্টিপাত হয় না।
Cirrocumulus Clouds
এ ধরণের মেঘগুলো সাধারণত ভূমি হতে ৫ কিমি এর বেশি উচ্চতায় সৃষ্টি হয়।এরা ছোট কেশগুচ্ছের ন্যায় প্যাটার্নে বা হালকা হালকা গোলাকার স্তূপে আকাশে মাইলের পর মাইলব্যাপী ভাসমান অবস্থায় থাকে।মেঘগুলো মাঝেমধ্যে ধূসর রং ধারণ করে।এদেরকে মাঝেমধ্যে Cumulus বা Altocumulus মেঘের সাথে গুলিয়ে ফেলে অনেকে। Cirrocumulus এর কোনো শেডিং থাকে না এবং Altocumulus এর কিছু অংশ বাকি অংশের চেয়ে গাঢ় হয়।
Cirrocumulus মেঘগুলো সাধারণত
Cirrus মেঘের পর আসে।এই মেঘও পরিস্কার আবহাওয়া প্রদর্শন করে।
Cirrostratus Clouds
এই মেঘগুলো আকাশে সাদা ফিনফিনে চাদরব্র মত বিস্তৃত থাকে,যেন মনে হয় বিশাল এর কম্বল পুরো আকাশকে আবৃত করে রেখেছে।এদের রং সাধারণত উজ্জ্বল ধূসর বা সাদা প্রকৃতির হয়।এই মেঘগুলো খুব সুন্দরভাবে আলো প্রতিফলিত করতে পারে ফলে এ ধরণের মেঘে সাধারণত হ্যালো ইফেক্ট বা বলয়প্রভা দেখা যায়।Cirrostratus মেঘগুলো সাধারণত বৃষ্টির পূর্বাভাস নির্দেশ করে।এ মেঘগুলো দেখা যাওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই সাধারণত বৃষ্টিপাত হতে পারে।বৃষ্টিপাতের পরেও এ ধরণের মেঘ আবির্ভুত হতে পারে এবং রামধনু সৃষ্টি করে।
Mid-level Clouds
(মধ্যম উচ্চতার মেঘমালা)
Range-(2-7 km)-
Altocumulus Clouds
বর্তমান সময়ে এই মেঘগুলোই সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে।শীতকালে এই মেঘগুলো নিয়ে অনেকেই আলোকচিত্র ধারণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।কারণ এই মেঘগুলো দেখতে খুবই সুন্দর।গত কয়েক দিনে পুরো বাংলাদেশে এ ধরণের মেঘ দেখা গেছে।Altocumulus মেঘগুলো সাধারণত মধ্যম উচ্চতা থেকে বেশি উচ্চতার দিকে সৃষ্টি হয়।ছোট ছোট গোল আকৃতির এই মেঘগুলো দেখতে ভীষণ সুদৃশ।বড় মেঘ ভেঙে গিয়ে এগুলো সৃষ্টি হয়।এরা জলকণা ও বরফ ক্রিস্টালের মিশ্রণে তৈরি হয়।ছোট ছোট গোল গোল আকৃতিতে এরা পুরো আকাশকে ঘিরে রাখে।মনে হয় ছেঁড়া পাকানো তুলোর গুটির মত।শীতকালে এদের বেশি দেখা যায়। ঝড়ো হাওয়ায়ও এসব মেঘ সৃষ্টি হতে পারে।
Altostratus Clouds
এই মেঘগুলো বিশালাকৃতিতে মাইলব্যাপী বিস্তৃত থাকে।হালকা বৃষ্টির সময় এদের দেখা যায়।মেঘগুলোর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে জলকণা থাকে যা ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়।এদের রং সাধারণত ধূসর বা নীলাভ হয়ে থাকে।অস্পষ্ট চাদরের মত এরা পুরো আকাশব্যাপী বিস্তৃত থাকে।এ মেঘ থেকে অনেকক্ষণ ধরে বৃষ্টি হতে পারে।গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির সময় এদের বেশি দেখা যায়।এরা সূর্য রশ্মিকে ঢেকে দিতে পারে এবং আকাশকে কিছুটা অন্ধকার করে তোলে।
Nimbostratus Clouds
এই মেঘের নামের প্রথম অংশটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ Nimbus থেকে যার অর্থ বৃষ্টি এবং শেষ অংশটি এসেছে Stratus থেকে যার অর্থ হলো ছড়িয়ে পড়া। যেসব মেঘে বৃষ্টির হয় তাদের নামের সাথে Nimbo শব্দটি জড়িয়ে থাকে।এগুলো এমন ধরনের মেঘ যারা প্রচন্ড বৃষ্টিপাত ঘটায়।এরা সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে দিতে পারে।বৃষ্টির সময় এই মেঘেরা নিকষ কালো অন্ধকারে পুরো আকাশকে ঢেকে দেয়।বর্ষাকালে এই মেঘেদের দেখা মিলে।বৃষ্টির সময় জলকণা অত্যধিক ঘনীভূত হয়ে যেকোনো ধরণের মেঘ থেকেই এর ধরণের মেঘ তৈরি হতে পারে।
মধ্যম উচ্চতায় সৃষ্টি হলেও মাঝে মাঝে এদের নিচে নেমে আসতে দেখা যায়।
Low level Clouds
(নিম্ন উচ্চতার মেঘমালা)
Range-(upto 2 km)
Stratus Clouds
Stratus মেঘগুলো হল পাতলা স্তরবিশিষ্ট মেঘ যা পুরো আকাশকে ঘিরে থাকে।এরা অনেকটা কুয়াশার মতই,তবে কুয়াশা থেকে একটু বেশি ঘনীভূত হয়ে মেঘের আকার ধারণ করে।এই মেঘেদের বিশেষ কোনো আকৃতি নেই, এরা স্তরে স্তরে পুরো আকাশব্যাপী বিস্তৃত থাকে।এই মেঘেরা সাধারণত ধূসর বা সাদা বর্ণের হয়।এরা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত ঘটায়।যদি প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা ধারণ করতে পারে তবে এরা Nimbostratus মেঘে পরিণত হতে পারে এবং তুমুল বৃষ্টিপাত ঘটাতে পারে।
Cumulus Clouds
শরৎকালের পেঁজা তুলোর মত মেঘ গুলোকে কেই না পছন্দ করে!এই মেঘেরা অনেক কবিতা,গল্প,উপন্যাসে জায়গা পেয়েছে।দেখতে পেঁজা পেঁজা তুলোর স্তূপের মত এই মেঘগুলো হলো Cumulus মেঘ।Cumulus শব্দের অর্থ স্তূপ।কখনো কখনো এই মেঘেদের নিচের অংশ সমতল এবং উপরের অংশ ফুলকপির মত দেখায়।এরা পরিষ্কার, নির্মল আবহাওয়া প্রদর্শন করে।এদের জন্যই শরৎকালের আকাশ এত পরিষ্কার এবং সুন্দর দেখায়। এই মেঘে সাধারণত বৃষ্টি হয় না।অনেক সময় এরা একসাথে জড়ো হয়ে Cumulonimbus মেঘে পরিণত হতে পারে।তখন এরা বৃষ্টিপাত ঘটায়।
Cumulonimbus Clouds
এই মেঘগুলোকে গ্রীষ্মের শেষে বা বর্ষাকালে বেশি দেখা যায়।বিশাল পর্বতের ন্যায় স্তূপীকৃত মেঘগুলো নিম্ন উচ্চতা বা মধ্যম উচ্চতায়ও সৃষ্টি হতে পারে।এ মেঘে প্রচুর পরিমানে জলকণা থাকে,বেশি উচ্চতায় জন্ম নিলে বরফের কণাও থাকে।এদের তলদশ কালো হয়। এই মেঘেরা বজ্রসহ তুমুল বৃষ্টিপাত ঘটায়,কখনো কখনো শিলাবৃষ্টিও ঘটাতে পারে।আকাশে এই মেঘেরা প্রবল গর্জন তোলে।কালবৈশাখীর সময় উত্তর-পশ্চিম আকাশে বিচরণ করে এরা।কোথাও এদের দেখতে পেলেই বুঝতে হবে সেখানে অপেক্ষা করছে বজ্রসহ বৃষ্টি।
Stratocumulus Clouds
এই মেঘগুলো পুরু তুলো বের হয়ে আসা কম্বলের ন্যায় দেখায়। এরা Cumulus মেঘেরই অনুরুপ,তবে Cumulus থেকে আকার আকৃতিতে অনেক বড়।এই মেঘের তলদেশ অনেকখানি সমতল তবে উপরের অংশ ছিন্ন তুলোর মত দেখায়।পুরুত্বের উপর ভিত্তি করে এরা সাদা,ধূসর বা গাঢ় ধূসর রঙের হতে পারে।নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে হেমন্ত বা শীতে এদের দেখা মিলে। Altocumulus মেঘ ভারী হয়ে নিচে নেমে এলে এই মেঘ সৃষ্টি হতে পারে।এই মেঘ আকাশে অধিক ঘনত্বে জমলে বৃষ্টিপাত হতে পারে।
Cloud species and variesties
(মেঘের প্রজাতি ও বৈচিত্র্য)
উপরে বর্ণিত প্রত্যেক প্রকারের মেঘের আবার নানা প্রজাতি ও বৈচিত্র্য রয়েছে।
প্রত্যেক প্রকারের মেঘকে স্বচ্ছতা,উপাদানের ঘনত্ব ও পুরুত্ব ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন প্রজাতিতে বিন্যস্ত করা যায়।
বৈচিত্র্যময় মেঘ-
- Duplicatus- একের অধিক স্তরবিশিষ্ট মেঘ।
- Introtus- অনিয়তাকার বা জট পাকানো মেঘ।
- Lacunocus- ছিদ্রাল,জালের ন্যায় বিস্তৃত মেঘ।
- Opacus- সুর্য বা চাঁদকে পুরোপুরি ঢেকে দেয়া মেঘ।
- Perlucidus- জোড়াতালি দেয়া মেঘ,মঝে ছোট ছোট ফাঁক থাকে, যার মধ্যে নীল আকাশ দেখা যায়।
- Radiatus- সমান্তরাল ভাবে অবস্থান করা খন্ড খন্ড মেঘ,যারা এক বিন্দুতে মিলিত হয়।
- Translucidus- স্বচ্ছ মেঘ,যারা চাঁদ বা সূর্যকে ঢেকে এর মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট দেখা যায়।
- Undulatus- ঢেউ খেলানো পাতলা মেঘ।
- Vartibratus- হাড়ের মত দেখতে মেঘ।
এই বৈচিত্র্যগুলো প্রায় সকল মেঘের ক্ষেত্রে দেখতে পাওয়া যায়।এদের উপর ভিত্তি করে মেঘের প্রজাতি বিন্যস্ত করা হয়।
Species of Clouds
(মেঘের প্রজাতি)-
প্রত্যেক প্রকারের মেঘকে এ বৈশিষ্ট্যগুলোর ভিত্তিতে আলাদা আলাদা প্রজাতিতে ভাগ করা যায়।মেঘের প্রকারের যেন কোনো শেষ নেই।সকল মেঘেরই প্রজাতিভিত্তিক শ্রেণিবিন্যাস রয়েছে।
Cirrus species-
Cirrus fibratus -
এই প্রকৃতির Cirrus মেঘগুলো সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।এরা পাতলা এবং তন্তুময়।ছোট ছোট স্তরে পাতলা ফিতার ন্যায় পুরো আকাশব্যাপী বিস্তৃত থাকে।
Cirrus uncinus-
এ মেঘ গুলো দেখতে ফালি ফালি এবং জালের মত ছড়িয়ে থাকে।
Cirrus spissatus-
এরা অন্য Cirrus মেঘের চেয়ে ঘন ও মোটা এবং অনেক উঁচুতে অবস্থান করে।
Cirrus floccus-
এই মেঘেরা Cirrus,তবে তুলোর মত আচ্ছাদন থাকে।
Cirrus castellanus-
এরা একটু উলম্ব ধরণের হয় এবং এদের চূড়া কিছুটা গম্বুজাকৃতির হয়।
Cirrucumulus Species-
Cirrucumulus stratiformis-
দেখতে মাছের পিঠের মত এই মেঘেরা খুবই সুপরিচিত।এদের বিভিন্ন ঋতুতে দেখতে পাওয়া যায়।
Cirrucumulus lenticularis-
এই মেঘেরা কিছুটা বড় আকৃতির এবং গোল গোল অংশ থাকে।
Cirrucumulus floccus-
এই প্রকৃতির মেঘেরা অসংখ্য ছোট ছোট অংশে বিভক্ত থাকে এবং প্রত্যেকটি অংশ একে অপরের থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন থাকে।
Cirrucumulus castellanus-
একটু উলম্ব ধরণের হয়,ছোট ছোট টাওয়ারের মত বিস্তৃত থাকে।
Cirrostratus Species-
Cirrostratus fibratus-
পশমি মেঘ,ছেঁড়া তুলোর ন্যায় বিস্তৃত থাকে।
Cirrostratus nebulosus-
অনেকটা অস্বচ্ছ ঘোমটার মত দেখতে, এতটাই অস্বচ্ছ যে কখনো কখনো এদের চোখেই পড়ে না।
Altocumulus Species-
Altocumulus stratiformis-
স্ফীত শাখান্বিত মেঘ,ছোট ছোট টুকরায় বিভক্ত হয়ে পুরো আকাশ ঢেকে রাখে।
Altocumulus lenticularis-
লেন্স আকৃতির টুকরায় বিভক্ত থাকে। পাহাড়ি এলাকায় বেশি দেখা যায়।
Altocumulus castellanus-
অন্যান্য Altocumulus মেঘের চেয়ে প্রশস্ত,একটু বড় টুকরায় বিভক্ত থাকে।।
Altocumulus floccus-
এবড়োথেবড়ো টুকরায় বিভক্ত থাকে। টুকরাগুলো বিষম আকৃতির হয় এবং বড়-ছোট অসংখ্য অংশ থাকে।
Altostratus Species-
Altostratus undulatus-
ঢেউ খেলানো মেঘ,তরঙ্গের ন্যায় বিস্তৃত থাকে।আবিহাওয়া পরিবর্তনের সময় উদিত হয়।
Altostratus duplicates-
অনেকগুলো লেয়ার বা স্তর একে অপরের উপর বিস্তৃত থাকে।স্তরগুলোকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যায়।
Altostratus pannus-
বিশৃঙখল স্তরগুলোকে ছিন্নভিন্ন কাপড়ের মত দেখায়।
Altostratus Translucidus-
এর অন্যান্য প্রজাতি থেকে অনেক স্বচ্ছ, চাঁদ বা সূর্যের আলোকে বাধা দেয় না।
Altostratus radiatus-
দিগন্তের সমান্তরালে থাকে,প্রশস্ত স্তরে বিন্যস্ত থাকে।
Altostratus mamma-
এদের স্তরগুলো গোল গোল বাটির ন্যায় আকৃতি ধারণ করে।
Altostratus opacus-
বৃষ্টির দিনে এদের বেশি দেখা যায়, অন্ধকারাচ্ছন্ন ও অস্বচ্ছ স্তরে বিন্যস্ত থাকে।
Stratocumulus Species
Stratocumulus stratiformis-
এই মেঘেরা পুরো পৃথিবীব্যাপী খুবই সাধারণ।বিশাল সমতল মেঘগুলোর মাঝে ছোট ছোট খাঁজ থাকে।
Stratocumulus cumulogenitus-
পুরু মেঘগুলো Cumulus থেকে সৃষ্টি হয়।তাপমাত্রা কমে গেলে Culumus মেঘগুলো আরো পুরু ও ঘন হয়ে এই মেঘের সৃষ্টি হয়।
Stratocumulus castellanus-
এগুলো অত্যধিক পুরু এবং গুড়ো Stratocumulus মেঘ।
Stratocumulus lenticularis-
নেন্স আকৃতির তরঙ্গায়িত এই Stratocumulus মেঘগুলো পাহাড়ি এলাকায় দেখতে পাওয়া যায়।
Stratus Species
Stratus fractus-
সুত্রাকার হালকা মেঘ,বাতাসের ধাক্কায় খুব দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে।
Stratus nebulosus-
ধূসর অস্বচ্ছ মেঘ,বৃষ্টিপাতের পর দেখা যায় সাধারণত।
Stratus opacus-
সেসব Stratus মেঘ,যারা অস্বচ্ছ এবং সুর্য ও চাঁদকে ঢেকে দেয়।
Stratus undulatus-
এরা দ্বিস্তরী তরঙ্গ প্রদর্শব করে।
Stratus praecipitatio-
বরফকণায় তৈরি Stratus মেঘ,যারা মৃদু বা মাঝারি বৃষ্টিপাত ও শিলাবৃষ্টি ঘটায়।
Strarus translucids-
হালকা পর্দার ন্যায় উজ্ব্বল Stratus মেঘ,যারা চাঁদ বা সূর্যকে ঢেকে দেয় কিন্তু আলো আসতে কোনো প্রকার বাধা সৃষ্টি করে না।
Cumulus species
Cumulus humilis-
এই Cumulus মেঘগুলো প্রশস্ত এবং ছোট ছোট খন্ডে ভাগ হয়ে আকাশে বিস্তৃত থাকে।
Cumulus mediocris-
এরা দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে সমান,সুষম আকৃতির মেঘ,অন্যান্য Cumulus মেঘের মাঝে এদের অল্প পরিমাণে দেখতে পাওয়া যায়।
Cumulus congestus-
অনেকটা চিমনির মত দেখতে লম্বাটে আকৃতির Cumulus মেঘ।
Cumulus fractus-
Cumulus মেঘের বিচ্ছিন্ন কিছু অংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়ে এই প্রজাতির Cumulus মেঘ তৈরি করে।
Cumulonimbus species
Cumulonimbus calvus
কম ঘনত্বের স্তূপীকৃত মেঘ যারা অল্প অল্প করে দানা বাঁধে।
Cumulonimbus capillatus-
এদের উপরের অংশ ছোট ছোট তন্তুর ন্যায় দেখায়।Cumulonimbus এর জলকণারা যখন অধিক ঘন হয়ে বরফ কণায় পরিণত হয় তখন এই প্রজাতির উদ্ভব ঘটে।
Cumulonimbus incus-
অধিক ঘন Cumulonimbus মেঘ যাদের উপরিভাগ কিছুটা চ্যাপ্টা প্রকৃতির হয়।
Asperitus Species-
Undulatus asperitus-
এরা খুবই বিরল প্রকৃতির মেঘ।আজ পর্যন্ত খুব কমই দেখতে পাওয়া গেছে এদের।অনেক বছর ধরে ক্লাউড এপ্রিশিয়েন সোসাইটির প্রত্তিষ্ঠাতা গ্যাভিন প্রিটর পিনি এই নতুন প্রজাতির মেঘের স্বীকৃতি দাবি করে আসছিলেন।অনেকটা রোলিং আকৃতির আঁকাবাকা এই মেঘগুলো ২০১৭ সালের মার্চে স্বীকৃতি পায়।বর্ণিল এই মেঘগুলো দেখতে অনেকটা জ্বলন্ত অগ্নিসাগরের মত।এজন্য অনেকে একে Clouds from hell ও বলে থাকে।
এই ছিল মেঘমল্লারের সাতকাহন। এত এত মেঘেরা প্রতিদিন আমাদের দৃষ্টির আড়ালে হারিয়ে যায়,মেঘের পর মেঘ আসতে থাকে।কোনো কোনো মেঘ বয়ে নিয়ে শরতের নির্মল আকাশ,কেউ বা নিয়ে আসে বর্ষার তুমুল বৃষ্টি,কেউ নিয়ে আসে বিকট শব্দে বজ্রপাত। এতসব মেঘেরা নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিয়ে বিভিন্ন ঋতুকে করে তোলে বৈচিত্র্যময়।
তথ্যসূত্র:
লেখক: তাজউদ্দিন আহম্মদ
ব্যাঙের ছাতার বিজ্ঞান