লেখকঃ মনিফ শাহ চৌধুরী
১. হাইড্রোজেন (H): হাইড্রোজেন প্রথম ল্যাবে তৈরী করা হয় ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে, অ্যাসিড ও মেটালের রিয়েকশনে। হেনরি ক্যাভেনডিশ লক্ষ করেন এই গ্যাস পোড়ালে পানি তৈরি হয়। হাইড্রোজেন শব্দটি গ্রীক দুটো শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ "পানি তৈরিকারী"।
২. হিলিয়াম (He): ১৮৬৮ সালের সূর্যগ্রহনের সময় সূর্যের এটমোসফেয়ারের দ্বিতীয় লেয়ার, ক্রোমোসফেয়ারে এক অদ্ভুত হলুদ দাগ লক্ষ করা যায়। Norman Lockyer প্রথম এটি দেখেন এবং শুরুতে তিনি মনে করেন এটি সূর্যে তৈরি হওয়া সোডিয়ামের কারণে এই রঙের আলো তৈরি হচ্ছে। তবে পরে তিনি জানান এটি এমন এক এলিমেন্টের কারণে হচ্ছে যার অস্তিত্ব সম্ভবত পৃথিবীবাসীর কাছে অজানা। তিনি এবং ইংরেজ বিজ্ঞানী Edward Frankland এটির নামকরণ করেন গ্রীক শব্দ Helios এর নামে যার অর্থ সূর্য।
৩. লিথিয়াম (Li): ১৮০০ সালে ব্রাজিলিয়ান রসায়নবিদ José Bonifácio de Andrada e Silva পেটালাইট (LiAlSi4O10) আবিষ্কার করেন। ১৮১৭ সালে Johan August Arfwedson ল্যাবে কাজ করতে যেয়ে লক্ষ করেন পেটালাইটে একটি অজানা এলিমেন্ট আছে যা অনেকটা সোডিয়াম বা পটাশিয়ামের মতই ব্যবহার করে যদিও এর কার্বোনেট ও হাইড্রোক্সাইড অপর দুটোর চেয়ে পানিতে কম সলিউবল। তিনি এই মেটালের নাম দেন গ্রীক শব্দ lithos এর পরে যার অর্থ, " পাথর"।
৪. বেরিলিয়াম (Be): বেরিলিয়ামের মিনারেল বেরিল (beryl) এর ব্যবহার বহু আগে থেকেই প্রচলিত ছিল। এমনকি প্রাচীন মিশরের Ptolemaic dynasty তেও এর প্রচলন ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।১৮২৮ সালে Friedrich Wöhler বেরিলিয়াম ক্লোরাইডের সাথে বেশি রিয়েক্টিভ পটাশিয়ামের বিক্রিয়া ঘটান যার ফলে বেরিলিয়ামকে পিউর রূপে পাওয়া সম্ভব হয়। তিনিই প্রথম এটাকে নামকরণ করেন Beryllina।
৫. বোরন (B): বোর্যাক্স (টিনক্যাল) মিনারেল প্রাচীন চীনে চতুর্থ শতাব্দীতে ব্যবহৃত হত। এটি পরে পশ্চিমা বিশ্বে আসে যার কথা পারস্য-আরব অ্যালকেমিস্ট Jābir ibn Hayyān অষ্টম শতাব্দীতে উল্লেখ করেন। ১৮০৮ সালে Sir Humphry Davy বোরেটের ইলেক্ট্রোলাইসিসে লক্ষ করেন বাদামী এক Precipitate ইলেক্ট্রোডে জমা হচ্ছে। তিনি এরপর বোরেটকে পটাশিয়ামের সাথে বিক্রিয়া ঘটিয়ে যথেষ্ট পরিমাণ নতুন এলিমেন্ট সংগ্রহ করতে সক্ষম হন এবং এর নাম দেন boracium.
৬. কার্বন (C): প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই কার্বন মানুষের কাছে পরিচিত ছিল ছাই অথবা চারকোল রূপে। কার্বনের Allotrope দের মাঝে হীরা পরিচিত ছিল প্রাচীন চীনাদের কাছে প্রায় সাড়ে চারহাজার বছর আগে!
১৭৭২ সালে Antoine Lavoisier প্রমাণ করেন যে হীরা আর চারকোল আসলে মৌলিকভাবে একই। তিনি দুটো পোড়ান এবং দেখান যে গ্রাম প্রতি তারা একই পরিমাণ কার্বনডাইঅক্সাইড গ্যাস তৈরি করে। আরেক Allotrope গ্রাফাইটও যে কার্বন এটা প্রমান করেন Carl Wilhelm Scheele ১৭৭৯ সালে। কার্বনের অন্য Allotrope ফুলেরিন আবিষ্কার হয় ১৯৮৫ সালে। এবার নাম হয় তিন নোবেলজয়ী Robert Curl, Harold Kroto ও Richard Smalley. আলাদা এলিমেন্ট হিসেবে প্রথম কার্বনকে উল্লেখ করা হয় ১৭৮৯ সালে Antoine Lavoisier এর টেক্সটবইয়ে।
কার্বন শব্দটা এসেছে ল্যাটিন Carbo থেকে যার অর্থ কয়লা বা চারকোল। এছাড়াও এসেছে ফ্রেঞ্চ শব্দ charbon থেকে যার অর্থ চারকোল।
৭. নাইট্রোজেন (N): নাইট্রোজেনের কমপাউন্ড প্রাচীনকালের অনেক মানুষদের মাঝেই পরিচিত ছিল। মধ্যযুগের আলকেমিস্টরা নাইট্রিক এসিডকে aqua fortis বা strong water বলত।
মনিফ শাহ চৌধুরী,
ব্যাঙের ছাতার বিজ্ঞান।